IVF -এর পুরো নাম হল ‘In vitro fertilization’।এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে ল্যাবরেটরিতে শুক্রানু ও ডিম্বানুর মিলন ঘটিয়ে ভ্রুন সৃষ্টি করে তাকে মায়ের গর্ভে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়।এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় আইভিএফ বা ইন ভার্টো ফার্টিলাইজেশন।এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্য একেবারে উপযুক্ত।যেইসব দম্পতি বেশ কিছু বছর ধরে সন্তান ধারণ করার চেষ্টা করছেন কিন্তু কোনো কারণে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় সন্তান ধারণ করতে অপারক হচ্ছেন, তারা এই IVF -এর মাধ্যমে সহজেই সন্তান লাভ করতে সক্ষম হবেন।
আইভিএফ প্রক্রিয়া বর্তমানে সন্তানধারণের এক অন্যতম প্রক্রিয়া।বর্তমানে বহু দম্পত্তি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সন্তান লাভ করছেন।এই প্রক্রিয়া বর্তমানে বহুল প্রচলিত।তবে এই প্রক্রিয়ার যেমন সুবিধা আছে তেমন আছে কিছু অসুবিধাও।এখন এই প্রক্রিয়ার কিছু সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা যাক।
আইভিএফ(IVF) প্রক্রিয়ার সুবিধাঃ
আইভিএফ বর্তমানে অনেক সন্তান উৎপাদনে অপারক দম্পত্তিকে সন্তানসুখ দিতে সক্ষম হয়েছে। এই আইভিএফ প্রক্রিয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এর মাধ্যমে সন্তানকামী মা সফলভাবে গর্ভধারণ করতে পারছেন এবং একটি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পারছেন।এই আইভিএফ প্রক্রিয়া অনেক দম্পত্তির সন্তান লাভ করার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করছে।
আরও পড়ুনঃIVF: নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্য এক নয়া দিশা! জেনে নিন বিস্তারিত ভাবে এই প্রক্রিয়া সম্বন্ধে
১) আইভিএফ(IVF) প্রক্রিয়া বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এটি সুরক্ষার দিক থেকেও অন্যতমঃ
আইভিএফ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বহুদিন থেকেই বহু দম্পতি সফলভাবে সন্তানের জন্ম দিয়ে আসছে এবং তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করছেন। এই আইভিএফ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৯৭৮সালে লুসি ব্রাউন নামে এক শিশু জন্মগ্রহণ করেছিল। সেই হলো এই আইভিএফ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সফলভাবে জন্মানো প্রথম শিশু সন্তান। এরপর থেকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে এবং প্রক্রিয়াগত দিক থেকে এই পদ্ধতি দিন দিন আরও উন্নত হয়েছে। এর ফলে বিপদের আশঙ্কা ও কমেছে এবং সফলতার হার বেড়েছে। এখন খুব সহজেই একজন সন্তানকামী দম্পতি আইভিএফ এর মাধ্যমে তাদের স্বপ্নের সন্তানকে লাভ করতে পারেন।
২) আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে সিংগল মাদার( যে মা একা সন্তান জন্ম দেবেন এবং পালন করবেন) এবং সমকামী দম্পত্তিরাও সন্তান গ্রহণ করতে সক্ষম হবেনঃ
যেসব সিঙ্গেল মাদার এবং সমকামী দম্পতিরা সন্তান গ্রহণ করতে চাইছেন তাদের জন্য এই আইভিএফ পদ্ধতি এক সুবর্ণ সুযোগ। এর মাধ্যমে তারা সহজেই কোন পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই সন্তানের অধিকারী হতে পারবেন। কোন দাতা কর্ত্তৃক গৃহীত ঔরস দ্বারা এই প্রক্রিয়া সফল ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
৩) আইভিএফ বন্ধ্যাত্ব শনাক্তকরণে সাহায্য করেঃ
অনেক সময় বন্ধ্যাত্ব কি কারণে ঘটছে তা দম্পতিরা জানতে পারেন না। এই ক্ষেত্রে আইভিএফ সাহায্য করে। দম্পতিরা যখন আইভিএফ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে সন্তান ধারণ করতে চান তখন তাদের বন্ধ্যাত্ব শনাক্তকরণের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেই সময়ে জানা সম্ভব হয় ঠিক কি কারণে একজন দম্পতির সন্তান ধারণ করতে অসুবিধা হচ্ছে। বন্ধ্যাত্বের কারণ জানা গেলে সেটি যদি সমাধান করা সম্ভব হয় তবে সেটি তাড়াতাড়ি করা সম্ভব হবে।
৪) অতিরিক্ত ভ্রুন দান করা যায় অন্য দম্পতিকে সন্তান গ্রহণ করতে সাহায্য করার জন্য বা গবেষনা করার জন্যঃ
কোন দম্পতি যদি সেরকম ভাগ্যবান হয় যে তাদের দরকারি ভ্রুণ এর সাথে আরও একটি অতিরিক্ত ভ্রূণ তাদের কাছে আছে, তবে তারা সেই ভ্রুন দিয়ে অন্য আরেক সম্পত্তি কে সন্তান ধারণ করতে সাহায্য করতে পারবেন শুধু তাই নয় জীবন বাঁচাতেও এই ভ্রুন কাজে লাগতে পারে। সন্তান ধারন কারী দম্পতির সম্মতি নিয়ে সেই অতিরিক্ত ভ্রূণ গবেষণার কাজেও লাগানো যেতে পারে যাতে ভবিষ্যতে আর উন্নত মানের ব্যবস্থার সাথে সন্তানহীন দম্পতিদের সন্তান ধারন করতে সাহায্য করা যায়।
৫) যদি দম্পতির কোনো বংশগত রোগ থাকে তবে এই পদ্ধতির মাধ্যমে সেই বংশগত রোগবিহীন সন্তান লাভ করা সম্ভব হবেঃ
যদি কোনো দম্পতির কোন বংশগত রোগ থাকে তবে সাধারণত তাদের সন্তানের মধ্যেও সেই রোগ আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। তবে আইভিএফ প্রক্রিয়ায় সন্তান ধারন করলে সেই আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়। আইভিএফ প্রক্রিয়ার মধ্যে পিজিডি বলে একটি প্রক্রিয়া আছে যার মাধ্যমে ধারণকারী ভ্রুণ থেকে সেই বংশগত রোগ নিরাময় করা সম্ভব হয়। ফলে দম্পতি কোন বংশগত রোগ ছাড়া একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে সক্ষম হন।